অ্যানফিল্ডে লিভারপুল ভক্তদের উল্লাসে কেঁপেছিল পৃথিবী

ছবি: সংগৃহীত

অ্যানফিল্ড তৈরি ছিল আগেই। লিগ টাইটেল জিতেছিল ৩০ বছর পর। কিন্তু সেই উৎসব খুব একটা পূর্ণতা পায়নি করোনার কারণে। ২০২৫ সালের লিগ শিরোপা নিয়ে তাই লিভারপুলে উচ্ছ্বাস ছিল বেশি। কিন্তু ঠিক কতটা বেশি সেটা টের পাওয়া গেল শিরোপা নিষ্পত্তির কয়েকটা দিন পর। 

ইউনিভার্সিটি অব লিভারপুলের ডিপার্টমেন্ট অব আর্থ, ওশান এন্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সের একদল গবেষক জানিয়েছেন, গত ২৭ এপ্রিল টটেনহামকে ৫-১ গোলে হারিয়ে শিরোপা নিশ্চিতের দিনে পৃথিবীতে ভূমিকম্পের সৃষ্টি করেছিলেন অলরেড সমর্থকরা। সেটাও কেবল একবার না। লিভারপুলের ৫ গোলের প্রতিটিতেই রেকর্ড করা হয়েছিল আলাদা আলাদা ভূমিকম্প। 

ম্যাচে লিভারপুল ১১ মিনিটেই পিছিয়ে পড়ে। সেখান থেকে সমতায় আনেন লুইস দিয়াজ। আর স্বাগতিকদের প্রথমবার লিড এনে দেন মিডফিল্ডার অ্যালেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টার। তার ওই গোলের পর লিভারপুল সমর্থকদের উৎসবে সৃষ্টি হয়েছিল ১.৭৪ মাত্রার ভূমিকম্প। এরপরে প্রতিটি গোলেই ধরা পড়ে একটি করে মানবসৃষ্ট ভূমিকম্প। 

দ্বিতীয়ার্ধে মোহামেদ সালাহর গোলের পর রেকর্ড হয় ১.৬০ মাত্রার আরেকটি কম্পন। এছাড়া ম্যাচে কোডি গাকপোর গোলে ১.০৩ মাত্রা এবং উদোগির আত্মঘাতী গোলের পর ১.৩৫ মাত্রার ভূমিকম্প রেকর্ড করা হয়েছিল সেদিন। 

ভূমিকম্পের এই মাত্রা বেশ ক্ষুদ্র হলেও তা খবরের শিরোনামে পরিণত হয়েছে অ্যানফিল্ডে ৬০ হাজার লিভারপুল ভক্তদের উল্লাসের কারণে। ক্ষুদ্র মাত্রার এসব কম্পন ধরা পড়েছে একেবারেই অত্যাধুনিক ভূমকম্পন যন্ত্রে। ইতালি কিংবা চিলির মতো ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চলে এসব প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়। ইউনিভার্সিটি অব লিভারপুলের অধ্যাপক বেন এডওয়ার্ডসের ভাষ্য, “এটি কোনো কাকতালীয় ঘটনা নয়। মানুষের আবেগ থেকে উৎসারিত এই কম্পনগুলো বৈজ্ঞানিকভাবেই রেকর্ড হয়েছে। প্রতিটি গোল যেন তৈরি করছিল একেকটি ক্ষণিকের ভূমিকম্প।” 

গবেষণা কাজে নিয়োজিত ফারনাজ কামরানজাদ বলেন, ‘কে জানতো ফুটবল ভক্তরা ভূকম্পনের শক্তিটাই তৈরি করে ফেলবে। এই পরীক্ষা আমাদের বুঝিয়ে দেয়, বিজ্ঞান সবখানেই আছে। এমনকি অ্যানফিল্ডে প্রতিটা গোলের পর তৈরি হওয়া গর্জনের পেছনেও। প্রতিটি উল্লাস, প্রতিটি চিৎকার আমাদের পায়ের নিচে একটা ছাপ রেখে দিয়েছে। সম্মিলিত উৎসবের একটা সিসমিক ছাপ ফুটবলের শেষ বাজি বাজার পরেও পৃথিবীর ইতিহাসে থেকে যাবে।