রবিতে সূর্যবংশীর বৈভব সামলে টিকে থাকার লড়াই কেকেআরের
ক্রিকেটের ‘ল অফ অ্যাভারেজ’ অনুযায়ী ইডেন গার্ডেন্সে রান পাওয়ার কথা বৈভব সূর্যবংশীর। গুজরাত টাইটান্সের বিরুদ্ধে ৩৫ বলে শতরান করার পর মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে ২ বলে শূন্য রান করেছে রাজস্থান রয়্যালসের ব্যাটার। ঘরের মাঠে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে কলকাতা নাইট রাইডার্সকে সামলাতে হবে ১৪ বছরের কিশোরের চ্যালেঞ্জ।
ইডেনের গ্যালারিতে রবিবার থাকবেন বৈভবের বাবা এবং মা। এই প্রথম তাঁরা দু’জন এক সঙ্গে মাঠে আসবেন ছেলের খেলা দেখতে। বিহারের ব্যাটার নিশ্চিত ভাবে বাবা-মাকে খুশি করার চেষ্টা করবে। তাঁদের খুশিই দুঃখের কারণ হয়ে উঠতে পারে অজিঙ্ক রাহানেদের কাছে। বৈভবকে দ্রুত আউট করতে না পারলে ভুগতে হবে কেকেআরকে। গত রঞ্জি মরসুম থেকে যশস্বী জয়সওয়ালের সঙ্গে দূরত্ব বেড়েছে রাহানের। মুম্বই অধিনায়কের কিট ব্যাগে লাথিও মেরেছিলেন যশস্বী। তিনিও তেতে থাকতে পারেন রাহানের দলের বিরুদ্ধে। রাজস্থান রয়্যালসের ওপেনিং জুটি সাবলীল ব্যাটিং করলে পরিস্থিতি কঠিন হবে কেকেআরের জন্য। প্রায় প্রতি ম্যাচেই প্রতিপক্ষের প্রথম উইকেট নিতে অনেকটা সময় ব্যয় করে ফেলছেন হর্ষিত রানা, বৈভব অরোরা, সুনীল নারাইন, বরুণ চক্রবর্তীরা। রাজস্থানের বিরুদ্ধেও তেমন হলে ভুগতে হবে কেকেআরকে।
আইপিএলের প্লে-অফের লড়াই থেকে আগেই ছিটকে গিয়েছে রাজস্থান। রাহুল দ্রাবিড়ের দলের হারানোর কিছু নেই। পাওয়ারও নেই। রাজস্থান এখন প্রতিটি ম্যাচ খেলছে ভাল ভাবে মরসুম শেষ করার লক্ষ্যে। সাহসী ক্রিকেট খেলতে চাইছেন রাজস্থানের ক্রিকেটারেরা। রাজস্থানের এই অকুতোভয় মানসিকতা চাপে থাকা নাইটদের জন্য বিপজ্জনক।
শুধু বৈভব, যশস্বীই নয় কেকেআরকে সামলাতে হবে নীতীশ রানার চ্যালেঞ্জও। গত কয়েক বছর নীতীশ ছিলেন নাইটদের সংসারের অন্যতম প্রধান মুখ। ২০২৩ সালে নেতৃত্বও দিয়েছেন। অথচ গত নিলামে তাঁর প্রতি সামান্য আগ্রহও দেখাননি কেকেআর কর্তৃপক্ষ। সেই অবজ্ঞা, অবহেলা, অপমানের জবাব দেওয়ার জন্য রবিবারের ম্যাচকে বেছে নিতে পারেন নীতীশ। ইডেনের ২২ গজ তাঁর অপরিচিত নয়। তাঁর ঘরের মাঠ-ই বলা চলে। কেকেআরের অন্দরমহলের আবহের সঙ্গেও তিনি পরিচিত। এ ছাড়াও রাজস্থানে রয়েছেন রিয়ান পরাগ, ধ্রুব জুরেল, শিমরন হেটমেয়ারের মতো ক্রিকেটারেরা।
আইপিএলের প্লে-অফে জায়গা করে নিতে হলে গত বারের চ্যাম্পিয়নদের হারা চলবে না। বাকি ম্যাচগুলির একটি হারলেও তাকিয়ে থাকতে হবে অন্য দলগুলির দিকে। স্বভাবতই ঘরের মাঠে চাপ থাকবে কেকেআরের উপর। এখনও কেকেআরের ওপেনিং জুটি উল্লেখযোগ্য কিছু করতে পারেনি। রাহানে এবং অঙ্গকৃশ রঘুবংশী ছাড়া বাকি ব্যাটারেরা ভুগছেন ধারাবাহিকতার অভাবে। ফিনিশার রিঙ্কু সিংহকে আগের মরসুমের ফর্মে দেখা যাচ্ছে না। আন্দ্রে রাসেলও নিজের সুনামের প্রতি সুবিচার করতে পারছেন না। একই কথা বলা যায় বোলারদের ক্ষেত্রেও। বিশেষ করে পাওয়ার প্লেতে কেকেআরের বোলিং প্রত্যাশিত মানের হচ্ছে না।
সব মিলিয়ে রবিবার কেকেআরকে বৈভব, যশস্বী, নীতীশ এবং মরণবাঁচন পরিস্থিতিতে লড়াই করতে হবে। রাহানেদের চতুর্মুখী আক্রমণের মোকাবিলা করতে হবে। প্রতিটি পদক্ষেপ করতে হবে সাবধানে। প্রতিটি সিদ্ধান্ত নিতে হবে হিসাব করে। এর মধ্যে আশার আলো, তিন ম্যাচ পর গত ২৯ এপ্রিল দিল্লি ক্যাপিটালসের বিরুদ্ধে দাপুটে জয় পেয়েছেন নাইটেরা।