"শোকের ছায়া ফুটবল বিশ্বে, মারা গেলেন আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী ডিফেন্ডার"
আর্জেন্টিনার ১৯৭৮ বিশ্বকাপজয়ী দলের অন্যতম সদস্য, কিংবদন্তি সেন্টার ব্যাক লুইস গালভান আর নেই। নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে কর্দোভার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৭ বছর।
গালভানের মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়েছে আর্জেন্টিনা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (এএফএ)। এক শোকবার্তায় এএফএ জানায়, “আর্জেন্টিনার ফুটবলের ইতিহাসে গালভান ছিলেন এক উজ্জ্বল অধ্যায়। তার মৃত্যুতে আমরা গভীরভাবে শোকাহত। এই শোকাবহ মুহূর্তে তার পরিবার ও ঘনিষ্ঠজনদের প্রতি আমাদের আন্তরিক সমবেদনা।”
লুইস গালভানের পেশাদার ফুটবল ক্যারিয়ার শুরু হয় ১৯৭০ সালে। খেলোয়াড়ি জীবনের বড় একটি সময় তিনি কাটিয়েছেন আর্জেন্টিনার ঘরোয়া ক্লাব ফুটবলে। শৈশবে অ্যাটলেটিকো তাইয়েরেসের যুব দলে খেলা শুরু করলেও পরবর্তী সময়ে ক্লাবটির সিনিয়র দলে হয়ে ওঠেন অপরিহার্য। ক্লাবটির হয়ে রেকর্ড ৫০৩ ম্যাচ খেলার কৃতিত্ব রয়েছে তার। এছাড়া দেশের আরও কয়েকটি ক্লাব এবং ক্যারিয়ারের শেষ দিকে বলিভিয়ার ক্লাব বলিভারের হয়েও খেলেছেন তিনি। ১৯৮৭ সালে প্রিয় ক্লাব তাইয়েরেসেই পেশাদার ফুটবল থেকে বিদায় নেন।
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে গালভানের যাত্রা শুরু হয় ১৯৭৫ সালে, প্যান আমেরিকান গেমস দিয়ে। তবে ফুটবলবিশ্বে নিজের নামটি অমর করে রাখেন ১৯৭৮ সালের বিশ্বকাপে। ওই আসরে ডিফেন্স লাইনে অধিনায়ক দানিয়েল পাসারেলার সঙ্গে জুটি বেঁধে আর্জেন্টিনাকে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ শিরোপা এনে দেন তিনি। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ফাইনাল ম্যাচেও ছিলেন শুরুর একাদশে।
পরবর্তীতে ১৯৮২ সালে স্পেন বিশ্বকাপেও আর্জেন্টিনার স্কোয়াডে ছিলেন এই অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার। জাতীয় দলের জার্সিতে ৩৪টি ম্যাচ খেলার পর ১৯৮৩ সালে আন্তর্জাতিক ফুটবলকে বিদায় জানান গালভান।
লুইস গালভান শুধু একজন সফল খেলোয়াড়ই নন, ছিলেন আর্জেন্টিনার ফুটবল ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য অংশ। তার মৃত্যুতে দেশটির ফুটবলপ্রেমীরা হারালেন এক নির্ভরযোগ্য রক্ষাকবচকে, যিনি নিজের সুনিপুণ পজিশনিং আর শান্ত ধীর নেতৃত্বে আর্জেন্টিনার রক্ষণভাগকে করতেন দুর্ভেদ্য।