নিঃশ্বাস আটকে দেওয়া, অকল্পনীয় এবং সম্ভবত চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ইতিহাসের অন্যতম স্মরণীয় এক সেমিফাইনাল দেখল ফুটবলবিশ্ব। উত্তেজনায় ঠাসা এই ম্যাচে জয় পেয়েছে ইতালিয়ান ক্লাব ইন্টার মিলান। সফরকারী বার্সেলোনা একাধিকবার এগিয়ে গিয়েও শেষ পর্যন্ত ফাইনালের দৌড় থামাতে হয়েছে এক কদম দূরেই। দুই লেগ মিলিয়ে ৭-৬ ব্যবধানে জয় তুলে নিয়েছে সিমোনে ইনজাঘির দল।

সান সিরোতে সেমিফাইনালের ফিরতি লেগে নামা ইন্টার প্রথমার্ধেই নেয় ২-০ গোলের লিড। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তনে বার্সেলোনা একে একে তিন গোল করে ম্যাচ ঘুরিয়ে দেয় নিজেদের পক্ষে। তখনও থেমে থাকেনি ইন্টার। ইনজুরি টাইমে গোল করে ম্যাচে ফেরে তারা। নির্ধারিত সময় শেষে ৩-৩ সমতা থাকায় খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। অতিরিক্ত সময়ের ৯৯ মিনিটে আসে ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দেওয়া গোলটি, যা নিশ্চিত করে ইন্টারের ফাইনালে জায়গা।

এই নিয়ে শেষ তিন মৌসুমে দ্বিতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে উঠল ইন্টার মিলান, দুবারই কোচ ইনজাঘির অধীনে। ১ জুন মিউনিখে অনুষ্ঠিতব্য ফাইনালের টিকিট কেটে ইতিহাসে আরও একবার নিজেদের জায়গা করে নিল তারা। বিপরীতে বার্সার কোচ হ্যান্সি ফ্লিকের শিষ্যদের বহু কাঙ্ক্ষিত ফাইনাল খেলার স্বপ্ন ভেঙে গেল শেষ মুহূর্তে। প্রথম লেগে ৩-৩ ড্রয়ের পর ফিরতি লেগের নাটকীয়তায় শেষ হলো ৪-৩ গোলে ইন্টারের জয় দিয়ে।

ম্যাচের শুরুতে কিছুটা ধীরগতির খেলায় বার্সেলোনা দখল নেয় বলের। লামিনে ইয়ামাল বারবার চেষ্টা করেও ইন্টারের রক্ষণভাগ ভেদ করতে পারছিলেন না। এরই মধ্যে ২১ মিনিটে ডেনজেল ডামফ্রিসের অ্যাসিস্টে গোল করেন লাউতারো মার্টিনেজ। এরপর ৪২ মিনিটে পেনাল্টি থেকে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন হাকান চালহানগ্লু। বিরতিতে যায় ইন্টার ২-০ এগিয়ে (অ্যাগ্রিগেট ৫-৩)।

দ্বিতীয়ার্ধে বার্সেলোনা দুর্দান্তভাবে ঘুরে দাঁড়ায়। ৫৪ মিনিটে এরিক গার্সিয়া এবং ৬০ মিনিটে দানি অলমোর গোলে সমতায় ফেরে তারা। এরপর পুরো খেলায় প্রভাব বিস্তার করে ব্লু-গানারা। ৮২ মিনিটে ইয়ান সোমার দুইবার দুর্দান্ত সেভে ইয়ামালের শট ঠেকিয়ে দেন। তবে ইনজুরি টাইমে রাফিনিয়া দ্বিতীয় প্রচেষ্টায় বল জালে পাঠিয়ে ৩-২ গোলে এগিয়ে দেন বার্সাকে।

কিন্তু নাটকীয়তা তখনও বাকি। অতিরিক্ত সময়ে যাওয়ার ঠিক আগে ফ্রান্সিসকো অ্যাকারবির গোলে সমতা ফেরায় ইন্টার (৩-৩, অ্যাগ্রিগেট ৬-৬)। অতিরিক্ত সময়ের ৯৯ মিনিটে ডেভিড ফ্রাত্তেসির নিখুঁত ফিনিশ ইন্টারকে ৪-৩ এবং অ্যাগ্রিগেট ৭-৬ তে এগিয়ে দেয়।

শেষ সময় পর্যন্ত লেভানডফস্কি ও ইয়ামাল চেষ্টা চালিয়ে গেলেও, ইন্টারের গোলরক্ষক ইয়ান সোমারের দৃঢ় প্রতিরোধে আর ফেরা হয়নি বার্সার। দুর্দান্ত এই পারফরম্যান্সের জন্য ম্যাচসেরা নির্বাচিত হন তিনি।