ছবি: সংগৃহীত

সোশ্যাল মিডিয়া এবং মেসেজিং অ্যাপস যেমন টেলিগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুক ইত্যাদিতে প্রতারণার নতুন নতুন কৌশলগুলো দিনে দিনে বৃদ্ধি পাচ্ছে, এবং এর লক্ষ্য সাধারণত সাধারণ মানুষ, বিশেষত আর্থিক সংকটে থাকা মানুষ, শিক্ষার্থী, গৃহিণী বা বেকার যুবক-যুবতী। এগুলি বিশেষত সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে গড়ে ওঠে, যেখানে এক দল সাইবার অপরাধী প্রেমের অভিনয় বা বিনিয়োগ বিশেষজ্ঞ হিসেবে পরিচয় দিয়ে প্রলোভন দেয়।

এ ধরনের প্রতারণার ধরন বিভিন্ন হতে পারে, কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দুটি প্রধান পদ্ধতি রয়েছে:

১. প্রেমের অভিনয়:

প্রথমে এক সুন্দরী মেয়ের ছবি দিয়ে বন্ধুত্ব বা সম্পর্কের প্রস্তাব দেওয়া হয়। এরপর মেসেজিং চালিয়ে কথাবার্তা এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়, কখনো কখনো ভয়েস কলের মাধ্যমে কথাও হয়। এর পর, মেয়েটি বিভিন্ন বিনিয়োগ প্রস্তাব দিয়ে লিংক পাঠায়, যেখানে টাকা জমা করতে বলা হয়, এবং কথা হয়— "১ বছরের মধ্যে দ্বিগুণ টাকা হয়ে যাবে।" এক পর্যায়ে, প্রতারকরা সাধারণত মানুষকে টাকা পাঠানোর জন্য রাজি করিয়ে ফেলে।

২. লিংক পাঠিয়ে বা গোপন তথ্য সংগ্রহ করে টাকা আত্মসাৎ:

একইভাবে, প্রতারকরা লিংক পাঠিয়ে বা কোনো বিনিয়োগ প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে টাকা জমা করতে বাধ্য করে, অথবা তারা আপনার গোপন তথ্য সংগ্রহ করে (যেমন ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ডিটেইলস, পাসওয়ার্ড ইত্যাদি), যেগুলো ব্যবহার করে সহজেই আপনার টাকা হাতিয়ে নেয়।

এভাবে প্রতারণার হাত থেকে মুক্তি পেতে কিছু সতর্কতা:

  1. কম সময়ে টাকা দ্বিগুণ করার প্রস্তাবে সাড়া দেবেন না:
    কোনো ব্যক্তির বা সংস্থার কাছ থেকে যদি এমন কোনো প্রস্তাব আসে, যেখানে বলা হয় "তুমি যদি এইভাবে টাকা জমা করো, তাহলে ১ বছরের মধ্যে দ্বিগুণ হবে", তা হলেই বুঝতে হবে এটি একটি প্রতারণার ফাঁদ।

  2. অজানা লিংক এড়িয়ে চলুন:
    কোনো অপরিচিত লিংক বা ওয়েবসাইটে ক্লিক করবেন না। অনলাইনে প্রতারণার ঘটনা অত্যন্ত বাড়ছে, এবং এসব লিংক প্রায়শই ম্যালওয়ার বা ফিশিং সাইটের মাধ্যমে তথ্য চুরি করতে পারে।

  3. অফিশিয়াল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করুন:
    কোনো সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম (ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, টেলিগ্রাম) কখনও আপনাকে বিনিয়োগের বা অর্থ জমা করার জন্য মেসেজ পাঠাবে না। এ ধরনের মেসেজ পেলে সতর্ক থাকুন এবং তা এড়িয়ে চলুন।

  4. অচেনা গ্রুপ থেকে বেরিয়ে আসুন:
    হঠাৎ করে কোনো অচেনা গ্রুপে যদি আপনাকে যোগ করা হয়, তবে সাথে সাথে গ্রুপটি থেকে বেরিয়ে আসুন। কোনো প্রলোভনে পড়বেন না।

  5. সাবধানতা অবলম্বন করুন:
    যদি কোনো অচেনা ব্যক্তির কাছ থেকে বা প্ল্যাটফর্ম থেকে এমন কোনও প্রস্তাব আসে যা খুব ভালো বা সহজ মনে হয়, তবে সেটা প্রায়ই সন্দেহজনক হতে পারে। তাই সেগুলি এড়িয়ে চলুন।

কেন এটি বাড়ছে?

এ ধরনের প্রতারণা বিশেষভাবে গড়ে উঠছে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে, যেখানে অপরাধীরা সহজেই ভিকটিমদের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করতে পারে। "পিগ বুচারিং" এক ধরনের ফাঁদ যেখানে সাইবার অপরাধীরা একে অপরকে প্রলোভন দেয়, এবং সাধারণ মানুষকে বিশ্বাস করে এবং সহজেই অর্থ হাতিয়ে নেয়। এতে বিভিন্ন ধরনের প্ল্যাটফর্ম যেমন ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, টেলিগ্রাম, ডেটিং অ্যাপস ইত্যাদি ব্যবহৃত হচ্ছে।

এতটুকু, সবসময় সতর্ক থাকুন এবং নিজের ব্যক্তিগত তথ্য নিরাপদ রাখুন। অনলাইনে প্রতারণার শিকার হওয়ার আগে বুঝতে শিখুন এবং সাবধানতার সাথে কাজ করুন।